খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা

অঞ্জলি ২

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা - NCTB BOOK

 

 

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

 

এ অঞ্জলি চলাকালীন শিক্ষক তোমাকে মজার মজার কিছু অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবেন। তুমি অন্যদের বৈশিষ্ট্য জানার মধ্যদিয়ে নিজেকে জানবে, ভূমিকাভিনয় করবে, সহপাঠীদের ভূমিকাভিনয় উপভোগ করবে, ভিডিও দেখবে, ছবি দেখবে, গল্প শুনবে, গল্প লিখবে এবং বিভিন্ন আনন্দদায়ক কাজে অংশগ্রহণ করবে। এ অঞ্জলিতে তুমি খ্রীষ্টধর্মীয় বিধি বিধান যেমন, পরনিন্দা ও ক্রোধ পরিহার, শত্রুকে ভালোবাসা ও সহনশীলতা বিষয়ে যীশুর শিক্ষা উপলব্ধি করে অনুসরণ ও চর্চার মাধ্যমে জগতের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added || updated By

উপহার ২০

অন্যকে জানি

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

শিক্ষক এ সেশনটি একটি ছোট প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু করতে পারেন। তিনি তোমাকেও প্রার্থনায় নেতৃত্ব দিতে বলতে পারেন। তুমি আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারো।

আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের অত্যন্ত ভালোবাসি। তারা আমাদের আপনজন। তাদের নিয়ে তোমাকে। একটি কাজ করতে হবে।

তোমার পরিচিত একজনের যে দিকগুলো তোমার বেশি পছন্দ সেগুলো এবং যে দিকগুলো একটু কম পছন্দের তোমাকে শিক্ষক তা লিখতে দিতে পারেন। একইভাবে যাকে অপেক্ষাকৃত কম পছন্দ করো তার বৈশিষ্ট্যগুলোও তোমাকে লিখতে হতে পারে। সবচেয়ে বেশি পছন্দের ক্ষেত্রে 'ব্যক্তি ১' মাঝখানে লিখে চারদিকে তার বৈশিষ্ট্যগুলো লিখতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম পছন্দের ক্ষেত্রে 'ব্যক্তি ২' মাঝখানে লিখে একইভাবে তিনি তোমাকে কাজটি করতে বলবেন।

কীভাবে লিখতে হবে তার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো। শিক্ষক, এ চিত্রটি বোর্ডে/পোস্টার পেপারে এঁকে তোমাকে বুঝিয়ে দেবেন। তোমাকে আগে থেকেই বলছি- তুমি যেনো একটু চিন্তা করে রাখতে পারো।

এ কাজটি করার জন্যে শিক্ষক তোমাদের সময় নির্ধারণ করে দেবেন। নির্ধারিত সময় শেষ হলে শ্রেণিকক্ষে টাঙানো রশিতে কাগজটি আঠা দিয়ে লাগাতে বলতে পারেন।

কাজটি সম্পাদনের পর সারিবদ্ধভাবে ক্রমানুসারে পরস্পরের কাজটি ঘুরে ঘুরে দেখতে বলতে পারেন। তোমরা শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজটি করবে।

তোমাদের ধারণাগুলো সুন্দরভাবে প্রকাশের জন্যে শিক্ষক তোমাদের প্রশংসা করবেন।

শিক্ষককে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ২১

এসো নিজেকে জানি

 

পিতা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করবেন। তিনি তোমাদের চোখ বন্ধ করে দুই মিনিট ধ্যান করতে বলতে পারেন।

প্রিয় শিক্ষার্থী, গত সেশনে তোমাদের পরিবারের দুজন পরিচিত ব্যক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকসমূহ উল্লেখ করেছো। এবার একটু ভাবো তো-

  • তোমার কি কোনো নেতিবাচক দিক আছে? কী কী?
  • তোমার নেতিবাচক দিকের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম পছন্দের ব্যক্তির নেতিবাচক দিকের সংখ্যা কম না বেশি ছিলো?
  • কেনো কম/বেশি ছিলো?

আমরা প্রত্যেকে নিজেকে খুব ভালোবাসি। পিতা ঈশ্বরও আমাদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন বলেই তিনি অনেক গুণের সমন্বয়ে আমাদের সৃষ্টি করে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকের যেমন অনেক গুণ/ইতিবাচক দিক রয়েছে তেমনি কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। শিক্ষক তোমাকে নিজের গুণ/ইতিবাচক দিকগুলো এবং যে গুণগুলো তোমার থাকা প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো- তার একটি তালিকা তৈরি করতে। বলবেন। এর একটি নমুনা হতে পারে এরকম-

 

এ কাজটি করার জন্যে তিনি সময় নির্ধারণ করে দেবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তুমি কাজটি শেষ করবে। তুমি যে তালিকাটি তৈরি করেছো- শিক্ষক তা শ্রেণিকক্ষে আলোচনা করবেন।

 

বাড়ির কাজ

প্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক তোমাকে একটি বাড়ির কাজ দেবেন। বাড়ির কাজটি মূলত করবেন তোমার মা-বাবা/ অভিভাবক। নিচে একটি ছক দেওয়া আছে। তুমি তোমার মা-বাবা/অভিভাবককে এটি দেখাবে এবং পূরণ করতে বলবে। তাদের তুমি সর্বতোভাবে সহায়তা করো। তোমার মা-বাবা/অভিভাবক যথাসময়ে এটি পূরণ করে দেবেন। তোমাকে কিন্তু পরবর্তী সেশনে শিক্ষককে এ কাজটি দেখাতে হবে।

 

তোমার সর্বাত্মক সহায়তার জন্যে শিক্ষক তোমাকে ধন্যবাদ জানাবেন। তুমিও তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

নিজের গুণ অন্যকে বলি

উপহার ২২

নিজের গুণ অন্যকে বলি

 

 

এ সেশনে শিক্ষক ছোট একটি ধন্যবাদের প্রার্থনা দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করবেন। প্রার্থনা পরিচালনার জন্যে যে কোনো একজন শিক্ষার্থীকে তিনি দায়িত্ব দিতে পারেন। তুমি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে প্রার্থনা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, গত সেশনে তোমার নিজের যেসব গুণ/ইতিবাচক দিক রয়েছে এবং যেসকল গুণ তুমি অর্জন করতে চাও। তা চিহ্নিত করেছো। একইভাবে তোমার মা-বাবা/অভিভাবকও তোমার কিছু গুণ ও কিছু প্রত্যাশিত গুণ উল্লেখ করেছেন।

এবার শিক্ষক তোমার তৈরি তালিকাটির সাথে মা-বাবা/অভিভাবকের তালিকাটির তুলনা/মিল করতে বলতে পারেন। তোমার তৈরি তালিকার সাথে যে অমিলগুলো রয়েছে তা চিহ্নিত করে লিপিবদ্ধ করতেও বলতে পারেন। নির্ধারিত সময়ে এ কাজটি তোমাকে করতে হবে।

এ সেশনে তোমরা একটি মজার খেলা খেলবে। কীভাবে খেলবে তা শিক্ষক তোমাকে বুঝিয়ে বলবেন। এ খেলায় তোমরা একে অপরের হাত ধরে একটি বৃত্ত তৈরি করবে। তোমরা পর্যায়ক্রমে একটি করে নিজের গুণ বলবে এবং অন্যদের মধ্যে যাদের এ গুণটি রয়েছে তারা প্রত্যেকে হাত তুলবে। এভাবে প্রত্যেকের একটি করে গুণ বলা শেষ হবার সাথে সাথে খেলাটির প্রথম ধাপ শেষ হবে।

দ্বিতীয় ধাপে একইভাবে তোমরা যে গুণগুলো অর্জন করতে চাও তা পর্যায়ক্রমে বলবে এবং অন্যদের মধ্যে যাদের সাথে সেটি মিলবে তারা হাত তুলবে। এভাবে প্রত্যেকের বলা শেষ হবার সাথে সাথে খেলাটি শেষ হবে।

কী? মজা হবে না?

তোমরা শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে কাজটি করবে।

Content added || updated By

পরনিন্দা পরিহার করবো

উপহার ২৩-২৫

পরনিন্দা পরিহার করবো

 

 

শিক্ষক গীতসংহিতা/সামসঙ্গীত ১০৩:১-৫ পাঠ করে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করবেন। এ পাঠটি তুমিও পড়ে ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে রেখো। কারণ শিক্ষক তোমাকেও এ অংশটি পাঠ করতে বলতে পারেন। সামনে কোনো সেশনে তোমাকে ভূমিকাভিনয়ও করতে হবে। তোমার সুবিধার্থে বাইবেলের এ অংশটুকু নিচে দেয়া হলো-

 

"হে আমার প্রাণ, সদাপ্রভুর গৌরব কর; 

হে আমার অন্তর, তাঁর পবিত্রতার গৌরব কর। 

হে আমার প্রাণ, সদাপ্রভুর গৌরব কর; 

তাঁর কোন উপকারের কথা ভুলে যেয়ো না। 

তোমার সমস্ত পাপ তিনি ক্ষমা করেন। 

তিনি তোমার সমস্ত রোগ ভাল করেন। 

তিনি মৃতস্থান থেকে তোমার জীবন মুক্ত করেন; 

তিনি তোমাকে অটল ভালবাসা ও মমতায় ঘিরে রাখেন। 

যা মংগল আনে তেমন সব জিনিষ দিয়ে তিনি তোমাকে তৃপ্ত করেন; 

তিনি ঈগল পাখীর মত তোমাকে নতুন যৌবন দেন।"

 

 

পূর্বের সেশনগুলোতে তুমি তোমার পরিচিত ব্যক্তিদের ও নিজের গুণ/ইতিবাচক দিক ও নেতিবাচক দিকসমূহ চিহ্নিত করেছো। ভেবে দেখো তো-

  • নিজের নেতিবাচক দিকগুলো চিহ্নিত করার সময় তোমার অনুভূতি কেমন ছিলো?
  • অন্যের নেতিবাচক দিকগুলো চিহ্নিত করার সময় তোমার অনুভূতি কেমন ছিলো?

 

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ

প্রিয় শিক্ষার্থী,

আমরা অন্যের দুর্বল দিকগুলো সহজেই খুঁজে পাই। কিন্তু নিজের দোষগুলো এতো সহজে খুঁজে পাই না। আবার একে অপরের সাথে অন্যের দোষগুলো নিয়ে আনন্দসহকারে আলোচনা করি; যাকে পরনিন্দা বলে। চলো দেখি মথি ৭:১-৫ পদে এ সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে।

দোষ ধরবার বিষয়ে শিক্ষা

মথি ৭:১-৫

"তোমরা অন্যের দোষ ধরে বেড়িও না যেন তোমাদেরও দোষ ধরা না হয়, কারণ যেভাবে তোমরা অন্যের দোষ ধর সেইভাবে তোমাদেরও দোষ ধরা হবে, আর যেভাবে তোমরা মেপে দাও সেইভাবে তোমাদের জন্যেও মাপা হবে।

তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটা আছে কেবল তা-ই দেখছ, অথচ তোমার নিজের চোখের মধ্যে যে কড়িকাঠ আছে তা লক্ষ্য করছ না কেন? যখন তোমার নিজের চোখেই কড়িকাঠ রয়েছে তখন কি করে তোমার ভাইকে এই কথা বলছ, 'এস, তোমার চোখ থেকে কুটাটা বের করে দিই'? ভণ্ড! প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠটা বের করে ফেল, তাতে তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটাটা বের করবার জন্যে স্পষ্ট দেখতে পাবে।"

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

যীশুর সময়ে লোকেরা অন্যের দোষ ধরতো ও পরনিন্দা করতো। এজন্যেই যীশু অন্যের দোষ ধরতে নিষেধ করেছেন। আমরা যেভাবে অন্যের দোষ ধরি আমাদের দোষও সেভাবে ধরা হবে। কারও দোষ ধরা বা কাউকে কোনোভাবে ঠকানো ঠিক নয়। অন্যের দোষ দেখার আগে নিজের দোষ দেখা দরকার। কারণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্যের চেয়ে আমার নিজের দোষ বেশি। যীশু নিজের দোষ শনাক্ত করতে বলেছেন এবং অন্যের দোষ ধরা পরিহার করতে বলেছেন।

এবার বাইবেলের পঠিত অংশে পরনিন্দা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে তা শিক্ষক তোমাদের জোড়ায়/দলগতভাবে আলোচনা করে লিখতে বলতে পারেন। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজটি করবে।

 

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ

পবিত্র বাইবেলের ইফিষীয় ৪:২৯-৩২ শ্রেণিকক্ষে ভক্তিসহকারে শুদ্ধ উচ্চারণে পাঠ করতে হবে। তোমরা অনেকেই বাইবেলের দু'একটি পদ পাঠের সুযোগ পেতে পারো। তুমি চাইলে আগে থেকে এ পদগুলো বাড়িতে অনুশীলন করতে পারো যাতে শ্রেণিকক্ষে নির্ভুলভাবে পাঠ করতে পারো। অন্যের দোষ ধরবার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা আমরা শুনেছি। এবার এসো পরনিন্দা পরিহার বিষয়ে বাইবেলের ইফিষীয় ৪:২৯-৩২ পদে এ সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে, দেখি।

 

 

 

পরনিন্দা পরিহার বিষয়ে শিক্ষা

ইফিষীয় ৪:২৯-৩২

'তোমাদের মুখ থেকে কোনো বাজে কথা বের না হোক, বরং দরকার মত অন্যকে গড়ে তুলবার জন্যে যা ভাল তেমন কথাই বের হোক, যেন যারা তা শোনে তাতে তাদের উপকার হয়। তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে দুঃখ দিও না, যাঁকে দিয়ে ঈশ্বর মুক্তি পাবার দিন পর্যন্ত তোমাদের সীলমোহর করে রেখেছেন। সবরকম বিরক্তি প্রকাশ, মেজাজ দেখানো, রাগ, চিৎকার করে ঝগড়াঝাটি, গালাগালি, আর সব রকম হিংসা তোমাদের কাছ থেকে দূর কর। তোমরা একে অন্যের প্রতি দয়ালু হও, অন্যের দুঃখে দুঃখী হও, আর ঈশ্বর যেমন খ্রীষ্টের মধ্যদিয়ে তোমাদের ক্ষমা করেছেন তেমনি তোমরাও একে অন্যকে ক্ষমা কর।

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

সাধু পৌল আমাদের অন্য লোকের বিষয়ে নিন্দা করতে ও দুর্বল দিক নিয়ে সমালোচনা করতে নিষেধ করেছেন। বরং অন্য মানুষের জন্যে মঙ্গল কামনা করে তাদের গড়ে তোলার জন্য ভালো কাজ করতে বলেছেন। আমাদের প্রত্যেককে পরনিন্দা পরিহার করে উৎসাহমূলক কথা বলতে হবে, যেন কেউ কষ্ট না পায়। আমাদের সব রকমের বিরক্তি প্রকাশ, রাগ, বাজে কথা বলা, ঝগড়া করা, চিৎকার-চেঁচামেচি কিংবা মেজাজ দেখানো পরিহার করতে বলেছেন। তিনি অন্যের প্রতি দয়ালু, অন্যের দুঃখে দুঃখী হতে ও ক্ষমা করতে পরামর্শ দিয়েছেন।

 

 

ভূমিকাভিনয়

পরনিন্দা পরিহার সম্পর্কে যীশু কতো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তা তোমরা শুনেছো। এ জানার ভিত্তিতে তোমাদের একটি মজার কাজ করতে হবে। এ পর্যন্ত তোমরা যা যা শিখেছো তা ব্যবহার করে পরনিন্দা পরিহার করার বিষয়ে এমনভাবে দলগতভাবে ভূমিকাভিনয় করতে হবে যাতে খ্রীষ্টিয় শিক্ষার প্রতিফলন ঘটে।

 

ভূমিকাভিনয়ের জন্যে প্রথমে শিক্ষক তোমাদের দলে বিভক্ত করবেন। এরপর দলগতভাবে স্ক্রিপ্ট তৈরির জন্যে সময় নির্ধারণ করে দেবেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তিনি স্ক্রিপ্ট সংশোধন করে দেবেন। নিজেদের মধ্যে চরিত্রগুলো বিভাজন করে মহড়ার জন্যে তোমাদের সময় দেয়া হবে। মহড়া সম্পন্ন হলে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দলকে অভিনয়ের জন্যে আহ্বান করবেন।

ভূমিকাভিনয় শেষে তোমাদের অভিনীত বিভিন্ন ভূমিকা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হবে। কোনো দলের ভূমিকায় যীশুর শিক্ষার প্রতিফলন না ঘটলে শিক্ষক সংশোধন করবেন। যে দল আন্তরিকতার সাথে অভিনয় করেছে তাদের উৎসাহিত করা হবে। তোমরা শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করো।

 

 

বাড়ির কাজ

 

মা-বাবা/অভিভাবকের কাছে তুমি তোমার নেতিবাচক দিকগুলো বলবে। তোমার কোন দুটি নেতিবাচক দিক ইতিবাচক দিকে রূপান্তরিত করতে চাও তা তাদের বলবে। কীভাবে এগুলো ইতিবাচক দিকে পরিণত করতে চাও তা তাদের সাথে share/আলোচনা করো এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শও নিতে পারো।

সকলে সক্রিয় থেকে কাজটি করে শিক্ষককে সহায়তা করবে।

Content added || updated By

পরনিন্দা পরিহার করার উপায়

উপহার ২৬-২৮

পরনিন্দা পরিহার করার উপায়

একটি গানের মধ্যদিয়ে শিক্ষক সেশনটি শুরু করবেন।

প্রিয় শিক্ষার্থী, তুমি নিশ্চয় তোমার মা-বাবা/অভিভাবকের সহায়তায় বাড়ির কাজটি করেছো। শিক্ষক তোমাকে বাড়ি থেকে লিখে নিয়ে আসা সকলের কাজের একটি তালিকা তৈরি করতে বলবেন। নির্ধারিত সময়ে তোমাকে কাজটি সমাপ্ত করতে হবে। কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছো কি না তা নিশ্চিত হতে শিক্ষক তোমাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে প্রশ্ন করতে পারেন।

এ সেশনে তোমাদের জোড়ায় একটি কাজ করতে হবে। কী করবে তা শিক্ষক তোমাদের বুঝিয়ে বলবেন। তোমরা মনোযোগসহকারে শুনবে। তুমি যে দুটি গুণ/ইতিবাচক দিক দুটি অর্জন করতে চাও তা কীভাবে করতে পারো তার একটি পরিকল্পনা জোড়ায় আলোচনা করে তৈরি করবে। তোমাদের তৈরি পরিকল্পনাটি তোমরা বোর্ডে/পোস্টার পেপারে এঁকে দেওয়া ছকের মতো করে লিখবে।

যেসব গুন/ইতিবাচক দিক আমি অর্জন করতে চাই

কীভাবে অর্জন করবো

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তোমাদের তৈরি পরিকল্পনাটি শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষক প্রয়োজনে তোমাদের ফিডব্যাক দেবেন।

 

 

 

বাড়ির কাজ

প্রিয় শিক্ষার্থী, পরবর্তী সেশনের আগেই তোমরা প্রত্যেকে পূর্ববর্তী সেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গুণ অর্জনের কাজটি বাড়িতে সম্পন্ন করবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মা-বাবা/অভিভাবকের সহায়তা নিতে পারো। যেমন- তোমার সাথে যদি কেউ রাগ করে তাহলে তুমি অন্য কারো সাথে তার সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলবে না বরং তোমার কোন ভুলের জন্যে রাগ করেছিলো, তা খুঁজে বের করতে চেষ্টা করো। এ কাজটি তোমার বইয়ে এঁকে দেওয়া ছকের মধ্যে লিখবে। লেখা শেষ হলে ছকের সর্বডানের কলামে মা-বাবা/অভিভাবকের মতামত ও স্বাক্ষর নেবে।

ঘটনার বিবরণ

অনুভূতি

মা-বাবা/অভিভাবকের মতামত ও স্বাক্ষর

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাড়িতে দেওয়া কাজটি করতে তোমার কোনো সমস্যা হয়েছে কি না শিক্ষক তোমার কাছে জানতে চাইলে তা নির্দ্বিধায় বলবে।

উপস্থাপন

তুমি বাড়িতে যে কাজটি করেছো তা কীভাবে করেছো এবং তোমার কেমন লেগেছে অর্থাৎ তোমার অনুভূতি শ্রেণিকক্ষে গল্পাকারে পর্যায়ক্রমে বলতে হবে।

এ কাজটির জন্যে শিক্ষক তোমার প্রশংসা করবেন। তোমার নেতিবাচক দিক ইতিবাচক দিকে পরিণত করতে যে কাজটি করেছ তার শুদ্ধতা কতটুকু- সে বিষয়ে শিক্ষক তোমাকে জানাবেন।

 

বাড়ির কাজ

তোমাকে প্রতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দ্বিতীয় সেশনের আগেই তুমি কীভাবে পরনিন্দা পরিহার করেছো তা তোমার বইয়ের নির্ধারিত পৃষ্ঠার ছকে লিখতে হবে যেখানে তোমার মা-বাবা/অভিভাবকের মতামত ও স্বাক্ষর থাকবে এবং শিক্ষকেরও স্বাক্ষর থাকবে। তোমার মা-বাবা/অভিভাবক প্রশ্নটি বুঝতে না পারলে নিচের ঘরের লেখাটি তাদের দেখাও। ছকটি নিম্নরূপ-

 

Content added || updated By

উপহার ২৯

একটি গল্প শোনো

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

তোমার শিক্ষক এ সেশনটি সমবেত প্রার্থনা দিয়ে শুরু করবেন। এরপর তিনি তোমাদের একটি গল্প বলবেন। এটি কোনো রূপকথার গল্প নয়, আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া সত্যিকারের ঘটনা। এবার তাহলে গল্পটি শোনো। গল্পটি মনোযোগ দিয়ে শুনবে কারণ এরপর তোমাদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।

খ্রীষ্টিনা ও ক্লডিয়া সহপাঠী। খ্রীষ্টিনা লক্ষ করছে যে ক্লডিয়া তাকে পছন্দ করে না। ক্লডিয়া তার জন্মদিনে সবাইকে চকলেট দিলো কিন্তু খ্রীষ্টিনাকে দিলো না। সেদিন খেলতে গিয়ে ইচ্ছে করে খ্রীষ্টিনাকে ধাক্কা দিলো। তার খারাপ আচরণে খ্রীষ্টিনা কষ্ট পায় কিন্তু নীরবে সহ্য করে। ঈশ্বরের কাছে ক্লডিয়ার মন ও আচরণ পরিবর্তনের জন্যে সবসময় প্রার্থনা করে। সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হলো। রাস্তা পিচ্ছিল হলো। তারা দু'জন একই রাস্তা ধরে হাঁটছিলো। হঠাৎ ক্লডিয়া পা পিছলে ব্যাগসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। খ্রীষ্টিনা তাকে হাত ধরে উঠতে সাহায্য করলো। ব্যাগটা তার কাঁধে তুলে দিলো। খ্রীষ্টিনার সাথে খারাপ আচরণ করে বিনিময়ে ভালো আচরণ পেয়ে ক্লডিয়া অবাক হয়ে গেলো। তার মনে অনুশোচনা হলো। সে খ্রীষ্টিনার দিকে তাকিয়ে বললো, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। এভাবে তারা দুজনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলো।

 

 

একক কাজ

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, গল্পটি তোমার কেমন লেগেছে? একটি সুন্দর গল্প আমাদের ভালো কিছু শেখাতে পারে। এ গল্পটি থেকে তুমি কী শিখতে পেরেছো? চিন্তা করে মনে মনে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করো। গল্পটি শোনার পর শিক্ষক তোমাকে তিন মিনিট সময় দেবেন চিন্তা করার জন্যে। তারপর তুমি নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখবে। নির্দিষ্ট সময়ে তোমাকে এ উত্তরগুলো লিখতে হবে।

১। গল্পের কোন চরিত্রটি তোমার ভালো লেগেছে? কেন ভালো লেগেছে? 

২। কোন চরিত্রটি ভালো লাগেনি? কেন ভালো লাগেনি? 

৩। তোমার মতে খ্রীষ্টিনার চরিত্রে কী কী মানবীয় গুণ রয়েছে? 

৪। ক্লডিয়ার আচরণের পরিবর্তন হলো কেন?

 

নির্দিষ্ট সময় পর শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী লেখা শেষ করো এবং দলনেতার হাতে খাতা জমা দাও। এবার শিক্ষক তোমাদের উত্তরপত্র থেকে একই ও শুদ্ধ উত্তরগুলো ব্ল‍্যাকবোর্ডে লিখবেন। লক্ষ করো, তোমার লেখা উত্তরের সাথে অন্যদের লেখা উত্তরের পার্থক্য আছে কি না। ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা উত্তরগুলোতে নতুন কিছু পেলে তা নোটবুকে লিখে রাখো।

তোমার নিজের জীবনের গল্প বলো

শিক্ষকের বলা গল্পের মতো তোমার নিজের জীবনে কি এরকম কোনো ঘটনা ঘটেছে? চিন্তা করে দেখো। যদি তুমি এ ধরনের কোনো ঘটনা শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে চাও শিক্ষক তোমাকে সুযোগ দেবেন। তুমি সাবলীল ও সংক্ষিপ্তভাবে তোমার জীবনের গল্পটি বলার চেষ্টা করো। তোমার সহপাঠীরাও তাদের জীবনের গল্প বলবে। তুমি তাদের গল্পগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবে। সহপাঠীদের গল্প বলা শেষ হলে করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করবে।

ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমবেতভাবে প্রার্থনা করো এবং শিক্ষককে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

ফুলের পাপড়িতে নিজের গুণ সাজাও

উপহার ৩০

ফুলের পাপড়িতে নিজের গুণ সাজাও

 

সেশনের শুরুতে শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানাও। তোমার এবং সহপাঠীদের পরিবারে কেউ অসুস্থ থাকলে তা শিক্ষককে বলো। তারপর সমবেতভাবে সকল অসুস্থ ব্যক্তির সুস্থতা কামনা করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো।

এ সেশনে শিক্ষক তোমাদের ৩-৫ জন করে দলে ভাগ করবেন। তোমরা নিজেরাই দলনেতা নির্বাচন করবে। সহপাঠীদের সমর্থন পেলে তুমিও দলনেতা হতে পারো। শিক্ষক তোমাদের প্রতিটি দলে নিচের প্রশ্ন সম্বলিত চিরকুট দেবেন।

 

 

'কী কী মানবীয় গুণ আমাদের অন্যের প্রতি সহনশীল ও ক্ষমাশীল হতে সহায়তা করে?'

 

তোমরা দলে বসে পাঁচ মিনিট প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করবে। তারপর পোস্টার পেপারে-রং পেন্সিল দিয়ে একটি সূর্যমুখী ফুল আঁকবে। দলের একজন একাই সম্পূর্ণ ফুলটি অঙ্কন করবে না। প্রথমে দলনেতা ফুলটির মাঝখানের বৃত্তাকার অংশটি আঁকবে এবং তাতে "মানবীয় গুণাবলি" কথাটি লিখবে। এরপর প্রত্যেক শিক্ষার্থী বৃত্তের চারদিকে একটি করে পাপড়ি আঁকবে এবং সেই পাপড়িতে একটি গুণের নাম লিখবে। এভাবে একটি সূর্যমুখী ফুল আঁকার মাধ্যমে তোমরা প্রত্যেকে প্রশ্নটির উত্তর লেখার জন্যে সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে। তোমার বইয়ে একটি সূর্যমুখী ফুল দেয়া আছে। দেখো, তোমরা পোস্টার পেপারে যে ফুলটি অঙ্কন করেছ সেটি এরকম হয়েছে কি না।

 

 

নির্ধারিত সময় পরে দলনেতাগণ ফুল আঁকা পোস্টার-পেপার শ্রেণিকক্ষের চারদিকে রশিতে টাঙিয়ে দেবে। সবাই ঘুরে ঘুরে এগুলো দেখবে ও পর্যবেক্ষণ করবে। নিজ দলের সূর্যমুখী ফুলে যে গুণের নাম লেখা হয়নি, তা যদি অন্য দল লিখে তবে তুমি তা নোটবুকে লিখে রাখো।

 

 

বাড়ির কাজ

 

 

শিক্ষক তোমাদের বাড়ির কাজ দেবেন। বাড়িতে গিয়ে তোমরা মা-বাবা/ অভিভাবকের সাথে ক্রোধ ও প্রতিশোধ পরিহার, শত্রুর প্রতি সহনশীলতা ও ক্ষমার বিষয় নিয়ে কথা বলবে এবং এ বিষয়ে মা-বাবা/অভিভাবকের ধারণা লিপিবদ্ধ করবে। পরবর্তী সেশনে তোমরা শ্রেণিকক্ষে এ বাড়ির কাজ উপস্থাপন করবে।

Content added || updated By

সহনশীলতা ও শত্রুকে ক্ষমা করা

উপহার ৩১-৩২

সহনশীলতা ও শত্রুকে ক্ষমা করা

 

শিক্ষকের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করো এবং সবাই মিলে নিচে প্রদত্ত গানে বা সমতুল্য অন্য কোনো গানে অংশগ্রহণ করো।

 

তুমি যখন বেদিতে যজ্ঞ কর নিবেদন

তখন যদি একথা হয় তোমার স্মরণ

তোমার প্রতি কোনো ভাইয়ের আছে অভিযোগ

তুমি যজ্ঞ রেখে ফিরে যাও তার কাছে আগে

প্রথমে মিলিত তুমি হও তার সনে

পরে এসে অর্পিও যজ্ঞ মোর পানে।

 

 

সুশীল বাড়ৈ, গীতাবলী ১২১

 

 

গান শেষ হলে শিক্ষক আজ পবিত্র বাইবেল থেকে শিষ্যদের কাছে বলা যীশু খ্রীষ্টের উপদেশবাণী তোমাদের দিয়ে পাঠ করাবেন। তোমরা মথি ৫:২১-২৪, ৩৮-৪২, পদগুলো পাঠ করবে। বাইবেল পাঠ করবে পবিত্রভাব নিয়ে এবং শব্দ শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করবে।

 

 

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ

অহংকার, লোভ, ক্রোধ, পেটুকতা, হিংসা এবং আলস্য- এই রিপুগুলো আমাদের পাপের পথে নিয়ে যায়। যেমন, ক্রোধ বা রাগের বশবর্তী হয়ে আমরা অনেক খারাপ কাজ করি। যার সাথে চিৎকার করে রাগ করি তাকে গালমন্দ ও মারধর করি। যীশু খ্রীষ্ট রাগ না করার বিষয়ে আমাদের উপদেশ দিয়েছেন। চলো দেখি, পবিত্র বাইবেলে এ বিষয়ে কী লেখা আছে।

 

 

 

ক্রোধের বিষয়ে শিক্ষা

মথি ৫:২১-২৪ পদ

'তোমরা শুনেছ আগের লোকদের কাছে এই কথা বলা হয়েছে, 'খুন করো না: যে খুন করে সে বিচারের দায়ে পড়বে।' কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ তার ভাইয়ের উপর রাগ করে সে বিচারের দায়ে পড়বে। যে কেউ তার ভাইকে বলে, 'তুমি অপদার্থ': সে মহাসভার বিচারের দায়ে পড়বে। আর যে তার ভাইকে বলে, 'তুমি বিবেকহীন,' সে নরকের আগুনের দায়ে পড়বে।

সেইজন্যে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বেদীর উপরে তোমার দান উৎসর্গ করবার সময় যদি মনে পড়ে যে তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কিছু বলবার আছে, তবে তোমার দান সেই বেদীর সামনে রেখে চলে যাও। আগে তোমার ভাইয়ের সংগে আবার মিলিত হও এবং পরে এসে তোমার দান উৎসর্গ কর।'

 

 

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

যীশু বলতে চেয়েছেন যে আমরা ভাই বা বোনের সাথে রাগ হয়ে কটুকথা বা গালমন্দ করলে ঈশ্বর আমাদের কঠিন শাস্তি দেবেন। ঈশ্বরের উদ্দেশে নৈবেদ্য অর্পণ করা পবিত্রতম কর্তব্য; কিন্তু ভাই বা বোনের কাছে ক্ষমা না চাইলে ঈশ্বর তা গ্রহণ করবেন না। তাই আগে ভাইয়ের কাছে নিজের কৃত অপরাধের জন্যে ক্ষমা চাইবো, পরে এসে ঈশ্বরের কাছে আমার দান উৎসর্গ করবো। ঈশ্বর চান যে, ক্ষমা করে ও ক্ষমা চেয়ে আমরা যেন মিলন ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবার ও সমাজ গড়ে তুলি।

 

 

ছবি আঁকবে

এবার তোমরা বাইবেলের মথি ৫: ২১-২৪ পদের আলোকে ছবি আঁকবে। ছবির বিষয়বস্তু হবে এরকম- বড় ভাই ছোট ভাইয়ের সাথে রাগ হয়ে কথা বলছে (১ম ছবি)। গির্জার/চার্চের উৎসর্গের বেদির সামনে বড় ভাই ঈশ্বরের উদ্দেশে নৈবেদ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। নৈবেদ্য উৎসর্গ না করে ছোট ভাইয়ের কাছে ফিরে যাচ্ছেন (২য় ছবি)। বড় ভাই ছোট ভাইকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরেছে (৩য় ছবি)। শিক্ষার্থীদের বলুন, তোমরা ধারাবাহিকভাবে তিনটি ছবি আঁকবে যেখানে রাগ দমন করে, ক্ষমা এবং পুনর্মিলনের বিষয়টি ফুটে উঠবে।

সময় শেষ হলে শিক্ষকের কাছে ছবিগুলো জমা দাও। শ্রেণিকক্ষে দলনেতাগণ রশির সাহায্যে ছবিগুলো টাঙিয়ে দেবে। তুমি সহপাঠীদের পোস্টার পেপারে আঁকা ছবিগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখো এবং তাদের প্রশংসা করো।

ছবি: গির্জার/চার্চের উৎসর্গের বেদির সামনে বড় ভাই ঈশ্বরের উদ্দেশে নৈবেদ্য নিয়ে উপস্থিত

 

 

 

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ

কেউ আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে আমরাও যদি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করি তবে সেটাকে প্রতিশোধ নেয়া বলে। কিন্তু যীশু বলেছেন, আমরা প্রতিশোধ নিবো না। কেউ যদি আমাদের জিনিস কেড়ে নিতে চায় তবে প্রতিবাদ না করে তা দিয়ে দেবো। অশান্তি করার চেয়ে আত্মত্যাগ করা শ্রেয়। চলো দেখি, বাইবেলে এ বিষয়ে কী লেখা আছে।

 

 

 

প্রতিশোধের বিষয়ে শিক্ষা

মথি ৫: ৩৮-৪২

'তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, 'চোখের বদলে চোখ এবং দাঁতের বদলে দাঁত।' কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের সংগে যে খারাপ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে কিছুই ক'র না: বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে তাকে অন্য গালেও চড় মারতে দিয়ো। যে কেউ তোমার জামা নেবার জন্যে মামলা করতে চায় তাকে তোমার চাদরও নিতে দিও। যে কেউ তোমাকে তার বোঝা নিয়ে এক মাইল যেতে বাধ্য করে তার সংগে দু'মাইল যেও। যে তোমার কাছে কিছু চায় তাকে দিও। আর যে তোমার কাছে ধার চায় তাকে দিতে অস্বীকার করো না।'

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

যীশু বলেছেন কেউ আমাদের প্রতি অন্যায় করলে আমরা প্রতিশোধ নেব না। কারণ প্রতিশোধ নিলে শত্রুতা আরও বেড়ে যায়। আমরা প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে অন্যায়কারীর জন্যে ভালো কিছু করলে তার মন পরিবর্তন হবে। সে সুপথে ফিরে আসবে এবং তার সাথে আমাদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। কেউ ধার চাইলে তাকে ধার দেবো, কারণ অন্যের প্রয়োজনে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা প্রতিশোধ নিয়ে অন্যায়কারীর বিচার করবো না। কারণ তার বিচার ঈশ্বর নিজেই করবেন।

বাইবেলের বাণী ভিডিওতে দেখো

এ সেশনে শিক্ষক তোমাদের ভিডিওর মাধ্যমে প্রতিশোধ না নেয়া সম্পর্কে যীশুর উপদেশবাণী প্রদর্শন করবেন।। এখানে ভিডিও লিংক দেয়া হলো। তুমি ইচ্ছে করলে বাড়িতে বসে এ ভিডিওটি আবার দেখতে পারো।

প্রতিশোধ সম্পর্কে যীশুর সতর্ক বাণী।। Bengali Bible Story

https.youtube.com/watch?v=AnYJXTgbQA@feature=share

 

 

জোড়ায় কাজ করো

বাইবেল পাঠ এবং ভিডিও দেখা শেষ হলে শিক্ষক তোমাদের জোড়ায় বসতে বলবেন। তোমার পরবর্তী ক্রমিক নম্বরের সহপাঠী তোমার জোড়া হতে পারে অথবা পাশে যে বসেছে সেও তোমার জোড়া হতে পারে। তোমরা জোড়ায় বসে আলোচনা করবে যীশু খ্রীষ্টের শিক্ষার আলোকে কী কী কল্যাণকর আচরণ করা উচিত এবং কী কী অকল্যাণকর আচরণ পরিহার করা উচিত। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি অনুধাবন করার চেষ্টা করো এবং নিচের ছকটি পূরণ করো। কাজটি করার জন্যে তোমরা দশ মিনিট সময় পাবে।

নির্ধারিত সময় শেষে প্রতি জোড়ার যে কোনো একজনকে শিক্ষক পূরণকৃত ছকটি শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করার জন্যে ডাকবেন। আশা করি তুমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উপস্থাপনার জন্যে এগিয়ে যাবে। শ্রেণির যে কোনো কার্যক্রমে সবসময় সক্রিয় থাকবে।

কল্যাণকর আচরণ

অকল্যাণকর আচরণ

১। ধৈর্যশীল হওয়া

 

১।  রাগ করা

 

২।

 

 

৩।

 

 

8।

 

 

৫।

 

 

 

ধন্যবাদ জানিয়ে তোমার শিক্ষককে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ৩৩-৩৪

মিলেমিশে থাকা

 

 

সেশনের শুরুতে শিক্ষককে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করো এবং নিচের গানটি অথবা শিক্ষক যদি অন্য কোনো গান গাইতে নির্দেশনা দেন, তবে তাতে অংশগ্রহণ করো।

 

ক্ষমার বাণী, ক্ষমার বাণী! 

বিশ্বত্রাতা মহাপ্রভুর প্রেম, ক্ষমার বাণী।।

যীশু প্রেমময় মোদের লাগি' ক্ষমা চায় 

নম্র হয়েছে ক্রুশের 'পরে হায় হায়। 

অপরাধী নয়, ক্ষমার তরে সইলে সবি।।

আত্মত্যাগী নিজেরে করেছে উজাড়

এই তো তারি প্রেমের পরিচয়।

মমতা দিয়ে গড়া ওরে তাঁর হৃদয়খানি।।

(গীতাবলী: গীতাঙ্ক ৯৩২)

 

আজ শিক্ষক তোমাদের বাইবেল থেকে মথি ৫:৪২-৪৮ পদ পাঠ করতে বলবেন। তোমরা দুই বা তিনজন বাইবেলের এই পদগুলো পাঠ করবে। প্রত্যেকে একটা করে পদ পাঠ করতে পারো।

 

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ

তোমরা জানো যে যারা আমাদের ক্ষতি করে তারা আমাদের শত্রু। তাদের আমরা ঘৃণা করি। ফলে তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক খারাপ হয়, দূরত্ব বাড়ে। কিন্তু শত্রুদের ভালোবাসলে তাদের মন পরিবর্তন হবে এবং তারা আমাদের বন্ধু হবে। চলো দেখি, যীশুখ্রীষ্ট এ বিষয়ে আমাদের কী শিক্ষা দিয়েছেন।

 

 

শত্রুকে ভালোবাসবার বিষয়ে শিক্ষা

মথি ৫:৪২-৪৮

'তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, 'তোমার প্রতিবেশীকে ভালবেসো এবং শত্রুকে ঘৃণা কোরো।' কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদেরও ভালবেসো। যারা তোমাদের অত্যাচার করে তাদের জন্যে প্রার্থনা করো। যেন লোকে দেখতে পায় তোমরা সত্যিই তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান। তিনি তো ভাল-মন্দ সকলের উপর সূর্য উঠান এবং সৎ ও অসৎ লোকদের উপরে বৃষ্টি দেন। যারা তোমাদের ভালবাসে কেবল তাদেরই যদি তোমরা ভালবাস তবে তোমরা কি পুরস্কার পাবে? কর-আদায়কারীরাও কি তা-ই করে না? আর যদি তোমরা কেবল তোমাদের নিজেদের লোকদেরই শুভেচ্ছা জানাও তবে অন্যদের চেয়ে বেশী আর কি করছ? অযিহূদীরাও কি তা-ই করে না? এইজন্য বলি, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা যেমন খাঁটি তোমরাও তেমনি খাঁটি হও।'

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

 

পৃথিবীতে ভালো-মন্দ, সৎ-অসৎ সব মানুষ ঈশ্বরের দয়ায় বেঁচে আছে। যীশুর সময়ে সমাজে যিহূদী ও অযিহূদীদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিলো না। ফলে সমাজে হানাহানি লেগে থাকতো। যীশু খ্রীষ্ট এ পৃথিবীতে এসেছিলেন ক্ষমা ও ভালোবাসার বাণী নিয়ে। তিনি বললেন যে, শুধু বন্ধুদের নয় শত্রুদেরও ভালোবাসতে হবে। ঈশ্বর তার সব সন্তানকে সমানভাবে ভালোবাসেন। তাই আমরাও ঈশ্বরের সন্তান হিসেবে শত্রু-মিত্র সবাইকে ভালোবাসবো। শত্রুদের ক্ষমা করবো, তাদের জন্যে প্রার্থনা করবো, যেন তারা সুপথে ফিরে আসে। ক্ষমাশীল ঈশ্বরের সন্তান হিসেবে আমরাও ভাইয়ের বা বোনের প্রতি ক্ষমাশীল হবো। এভাবে আমরা হয়ে উঠতে পারবো ঈশ্বরের প্রকৃত সন্তান।

 

'শত্রুকে ভালোবাসবার বিষয়ে শিক্ষা' ভিডিওতে দেখি

শত্রুকে ক্ষমা করার বিষয়ে নিচের যেকোনো একটি ভিডিও শিক্ষক তোমাদের দেখাবেন। ভিডিও লিংক দেয়া আছে। তুমি বাড়িতে নিজে এ ভিডিও দুটি দেখতে পারো। আশা করি তোমার ভালো লাগবে এবং যীশু খ্রীষ্টের ক্ষমা ও ভালোবাসার বাণী হৃদয়ে ধারণ করতে পারবে।

১. যীশু শত্রুকেও ভালোবাসতে বলেছেন, কিন্তু কেন? Bible Quotes in Bengali

https://youtube.com/watch?v=Oma6yDLmilk@feature=share

 

২. The Story of Two Friends-A Short Lesson About Forgiveness

https://youtube.com/watch?v=OxOoTICAGHA@feature=share

 

তোমার অনুভূতি প্রকাশ করো

বাইবেল পাঠ ও ভিডিও তোমার কেমন লেগেছে? শিক্ষক অবশ্যই সুযোগ দেবেন যেনো তুমি এ বিষয়ে তোমার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারো। মনে মনে প্রস্তুতি নাও, ভয় পেয়ো না। নির্ভয়ে ও সাবলীলভাবে তোমার অনুভূতি প্রকাশ করো।

 

গল্প লিখবে

তুমি অন্যের লেখা গল্প শুনতে ভালোবাসো। এবার তুমি নিজেই গল্প লিখবে। শিক্ষক তোমাকে গল্পের বিষয় বলে দেবেন। গল্পের বিষয় হলো-- 'শত্রুকে ক্ষমা করলে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কল্যাণ সাধিত হয়।' এ বিষয়টিকে মূলভাব ধরে একটি ছোট গল্প লিখবে। বাইবেল পাঠ ও ভিডিও দেখে যে জ্ঞান অর্জন করছো, তা প্রয়োগ করে দশ মিনিটের মধ্যে একটি ছোট গল্প লিখে জমা দেবে। লেখা শেষ হলে গল্পটি শিক্ষকের হাতে জমা দাও।

সবাই একসাথে বিশ্বের শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করো এবং শিক্ষককে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

 

Content added || updated By

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করো

উপহার ৩৫-৩৬

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করো

 

 

শিক্ষককে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করো এবং সমসাময়িক সময়ে দুর্ঘটনায় কবলিত মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্যে সমবেত প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করো।

ক্রোধ পরিহার করে ধৈর্যশীল হওয়া, প্রতিশোধ নেয়ার পরিবর্তে সহনশীল হয়ে শত্রুকে ক্ষমা করা ও ভালোবাসা- --ইত্যাদি বিষয়ে তোমার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা জানার জন্যে মুক্ত আলোচনা করো। তোমার শিক্ষক ও সহপাঠীরা নিশ্চয়ই তোমার প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর জানতে সাহায্য করবে। অন্যেরা প্রশ্ন করলে তুমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবে।

শিক্ষক তোমাদের সঠিক উপলব্ধির জন্যে এভাবে বলবেন... রাগ, প্রতিশোধপরায়ণতা ও শত্রুতা মানুষকে মানুষের কাছ থেকে এবং মানুষকে ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। অন্যদিকে ক্ষমা ও সহনশীলতা মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে। ক্ষমা ও সহনশীলতার অভাবে পরিবারে ও সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং এক দেশ অন্য দেশের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। যীশুর শিক্ষা আমাদের শান্তিময় সমাজ ও দেশ গড়তে আহ্বান করে। ব্রাজিলের বিখ্যাত লেখক পাওলো কোয়েলহো তাঁর "30 SEC READING: why do we shout in anger?" গল্পে লিখেছেন, "দুটো মানুষ যখন একে অপরের উপরে রেগে যায় তখন তারা একে অন্যের অন্তর থেকে দূরে সরে যায়। এই রাগ তাদের অন্তরের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে। এই দূরত্ব একটু একটু করে যতই বাড়তে থাকে ততই তাদের ক্রোধ বা রাগ বেড়ে যায় এবং তাদের আরও চিৎকার করতে হয় এবং আরও জোরে তর্ক করতে হয়।"

 

শিক্ষক যখন উপরের কথাগুলো বলবেন তুমি মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং তোমার কোনো মতামত থাকলে তা প্রকাশ করবে।

 

তোমার জীবনের একটি বাস্তব ঘটনা

আমাদের পরিবারে, সমাজে, দেশে ও বিদেশে মানুষের মধ্যে ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতার অভাবে নানা অকল্যাণকর ঘটনা ঘটছে। মানুষে মানুষে এবং জাতিতে জাতিতে সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। তোমরা এখন দলে বসে এ বিষয়ে আলোচনা করবে।

 

দলগত কাজের নির্দেশনা

শিক্ষক শ্রেণিতে তোমাদের সংখ্যা অনুযায়ী ৪-৫ জন করে কয়েকটি দলে বসতে বলবেন। এবার তোমরা দলে বসে রাগ হওয়া, প্রতিশোধ নেয়া ও শত্রুর প্রতি ঘৃণাবোধের কারণে পরিবারে, সমাজে, দেশে ও বিদেশে সংঘটিত কয়েকটি অকল্যাণকর ঘটনা শনাক্ত করে লিখবে। এ বিষয়ে তোমরা টিভি সংবাদ, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও দৈনিক খবরের কাগজ থেকে খবর সংগ্রহ করতে পারো। নিচের ছকে ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করো।

অকল্যাণকর ঘটনা

১। এসিড নিক্ষেপ

 

২। বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ

 

৩।

 

81

 

 

প্রতিটি দল থেকে একজন শনাক্ত করা ঘটনাগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করবে। তোমরা নিজ দল থেকে সর্বসম্মতিক্রমে একজনকে বেছে নাও যে একটি ঘটনা সম্পর্কে বলবে। শিক্ষক পর্যায়ক্রমে প্রতিটি দলকে ডাকবেন। অন্য দলগুলোর উপস্থাপনা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করবে।

বাড়ির কাজ

যীশু খ্রীষ্ট আমাদের বলেছেন, তোমার ভাইকে সত্তরগুণ সাতবার ক্ষমা করবে (মথি ১৮: ২২ পদ)। তাই ক্ষমাশীল ও সহনশীল হয়ে দুটি কাজ পরিবার ও বিদ্যালয়ে সম্পন্ন করবে। কাজ দুটি কীভাবে করেছ আগামী সেশনে ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে তা উপস্থাপন করবে। এ অভিনয় তোমরা জোড়ায় করবে। অভিনয়ের স্ক্রিপ্ট তোমরা নিজেরাই তৈরি করে পরবর্তী সেশনে জমা দেবে। অভিনয়ের জন্যে প্রয়োজনীয় পোশাক ও সামগ্রী নিয়ে আসবে। পরবর্তী সেশনের পূর্বে প্রস্তুতির জন্যে তিন দিন সময় পাবে।

ঈশ্বরের প্রশংসা করে সমবেত প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করো এবং শিক্ষককে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ৩৭-৩৮

ভূমিকাভিনয়

 

সেশনের শুরুতে শিক্ষকের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করো। সামসংগীত/গীতসংহিতা ১১৬:৫-৮ পদ সকলের সাথে সুর মিলিয়ে পাঠ করো।

 

"সদাপ্রভু দয়াময় ও ন্যায়বান: 

আমাদের ঈশ্বর মমতায় পূর্ণ। 

সদাপ্রভু সরলমনা লোকদের রক্ষা করেন; 

আমি অসহায় হয়ে পড়েছিলাম 

কিন্তু তিনিই আমাকে উদ্ধার করেছিলেন।

হে আমার প্রাণ, আবার শান্ত হও, 

কারণ সদাপ্রভু তোমার অনেক মংগল করেছেন। 

হে সদাপ্রভু, তুমিই মৃত্যু থেকে আমার প্রাণ, 

আর পড়ে যাওয়ার হাত থেকে আমার পা রক্ষা করেছ।"

 

 

অভিনয় করবো

শিক্ষকের নির্দেশমতে তুমি নিশ্চয়ই ভূমিকাভিনয়ের স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত করে নিয়ে এসেছো। শিক্ষকের হাতে এটা জমা দাও। তিনি এটা দেখে প্রয়োজনীয় সংশোধনী দেবেন। এবার তুমি সহপাঠীর সাথে অভিনয়ের মহড়া দাও। অভিনয়ের স্থান, পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী প্রস্তুত আছে কি না তা দেখো।। মহড়া শেষ হলে এবার শিক্ষক এক জোড়া করে অভিনয়ের জন্যে ডাকবেন। অভিনয় শেষ হলে কার অভিনয়ে সহনশীলতা ও ক্ষমা করার বিষয়টি কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা শিক্ষক মূল্যায়ন করবেন। তাই তুমি যে কাজটি করেছ তা অভিনয়ের মাধ্যমে যথাযথভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করো।

যীশু খ্রীষ্ট তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর পূর্বক্ষণে শত্রুদের ক্ষমা করেছেন। তিনি পিতা ঈশ্বরের কাছে মিনতি করে বলেছেন, 'পিতা, ওদের ক্ষমা কর! ওরা যে কী করেছে, ওরা তা জানে না' (লুক ২৩:৩৪)। যীশুর মতো সহনশীল ও ক্ষমাশীল হও। তাহলে তুমি পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারবে।

ক্ষমাশীল ও সহনশীল হওয়ার জন্যে আশীর্বাদ চেয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো। তুমি অবশ্যই প্রার্থনা পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারো। এরপর শিক্ষককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By
Promotion